বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৭ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য আয়া সোফিয়া জাদুঘরকে মসজিদ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এরদোগান বলেছেন, আয়া সোফিয়াকে তুরস্কের ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং মুসলমানদের নামাজের জন্য খুলে দেয়া হবে।
গত শুক্রবার (১০জুলাই) তুরস্কের শীর্ষ আদালত আয়া সোফিয়াকে ১৯৩৫ সালের তৎকালীন সরকারের যাদুঘরে পরিণত করার আদেশ বাতিল করে। যার ফলে বিখ্যাত এই স্থাপনাটি আবারো মসজিদে রূপান্তরিত করার পথে সব রকমের বাধা দূর হয়। এর পরপরই এরদোগান আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরের ঘোষণা দেন। আদালতের রায় প্রকাশের পর খুশিতে মেতে ওঠে তুর্কি জনগণ। তারা ইস্তাম্বুলের আয়া সোফিয়ার আশপাশে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে মুখরিত করে তোলে। ঐতিহাসিক এই ভবনটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করার ঘোষণার অল্প সময়ের মধ্যেই এই মসজিদ থেকে আজানের সুমধুর ধ্বনি বেজে ওঠে।
এক সংবাদ সম্মেলনে এরদোগান বলেছেন, ২৪ জুলাই আয়া সোফিয়ার মুল ভবনের ভিতরে মুসলমানেরা প্রথম নামাজ আদায় করবে এবং অন্যান্য মসজিদের মতো আয়া সোফিয়া মসজিদও স্থানীয়, অপরিচিত, মুসলমান এবং অমুসলিমদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
ইস্তাম্বুল শহরে অবস্থিত ৬ষ্ঠ শতাব্দীর এই বিখ্যাত স্থাপনা সারা বিশ্বের পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্থান।
অয়া সুফিয়ান মসজিদ নিয়ে বিতর্কের মূল কারণ হচ্ছে, এটিকে মসজিদ বলা হবে নাকি জাদুঘর বলা হবে তা নিয়ে। কারণ এক সময় এই স্থাপনাটি গীর্জা তথা খ্রিস্টানদের উপাসনার স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হত।
চতুর্থ ক্রুসেডের সময় ইউরোপের ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা এক অভিযান চালিয়ে কনস্টান্টিনোপল দখল করে তারা আয়া সোফিয়াকে অর্থডক্স গীর্জা থেকে ক্যাথলিক ক্যাথিড্রালে পরিণত করেছিল। এ নিয়ে খ্রিস্টানদের মধ্যে সংঘর্ষ ও দখল পাল্টা দখলের ঘটনার পর ১৪৫৩ সালে ওসমানিয় শাসনামলে এটিকে মসজিদে পরিণত করা হয়। এরপর ১৯৩৫ সালে তুরস্কের ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক এই মসজিদে নামাজ নিষিদ্ধ করেন এবং আয়া সোফিয়াকে একটি জাদুঘরে পরিণত করেন।
বর্তমানে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান ওই স্থাপনা তথা জাদুঘরকে ফের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার করার পদক্ষেপ নিয়েছেন। ঐতিহাসিক আয়া সোফিয়া মসজিদের ব্যাপারে গ্রিসের কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক বক্তব্য ও দাবির প্রতিক্রিয়ায় তুর্কি প্রেসিডেন্ট সাফ বলে দিয়েছেন, ‘তুরস্কের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অধিকার কারো নেই।‘ তিনি ইস্তাম্বুলের লুনাত এলাকায় একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘আয়া সোফিয়া মসজিদের ব্যাপারে তুরস্কের বিরুদ্ধে গ্রিসের কর্মকর্তাদের অভিযোগ তুরস্কের জাতীয় সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি আঘাত’।
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply