বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৮ অপরাহ্ন
জামালপুর থেকে মোঃ ইমরান মাহমুদঃ— বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর ঘটনার পর থেকেই ২৫০ শয্যা জামালপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাসেবায় ধস নেমেছে। চিকিৎসকের অভাবে প্রতিদিনই শত শত রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফেরত যাচ্ছে। গতকাল বুধবার দুপুর ২টা পর্যন্ত এ হাসপাতালে রোগী ভর্তি ছিল মাত্র ৮৫ জন।
আরও পড়ুনঃ আশুলিয়ায় প্রেসক্লাবের উদ্যোগে মাস্ক বিতরণ
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এ হাসপাতালে প্রতিদিন অন্তত ৫০০-র বেশি রোগী ভর্তি থাকে। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেয় সহস্রাধিক রোগী। হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় বিছানা পেতে থাকতে হয় রোগীদের। রোগী ও রোগীর স্বজনদের ভিড়ে হাসপাতালের কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই হতো না। কিন্তু করোনাভাইরাস আতঙ্কে হাসপাতাল এখন প্রায় ফাঁকা।
আরও পড়ুনঃ সাটুরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মাস্ক ও সাবান বিতরণ
গত ২৪ ঘণ্টায় এ হাসপাতালে রোগী ভর্তি হয়েছে মাত্র ৮৫ জন। চারতলার অর্থোসার্জারি পুরুষ ওয়ার্ডে কোনো রোগী ভর্তি নেই। প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে। পাশের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে ২১টি শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে দুজন, তিনতলায় পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে ১৭ জন ও মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ৯ জন, দোতলায় গাইনি ওয়ার্ডে চারজন ও প্রসূতি ওয়ার্ডে ২০ জন, নিচতলায় পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে চারজন এবং মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি আছে মাত্র আটজন।
হাসপাতালের বহির্বিভাগে দুজন আরএমওর কক্ষসহ নারী, শিশু ও পুরুষ রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য বহির্বিভাগের কোনো কক্ষেই চিকিৎসক নেই। রোগীদের তিনটি টিকিট কাউন্টার ও ওষুধ সংগ্রহের দুটি কাউন্টার বন্ধ। জরুরি বিভাগ ছাড়া গোটা হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কোনো ওয়ার্ডেই কারো দেখা মেলেনি। হাসপাতালের এক্স-রে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম কক্ষ এবং ল্যাবেও কোনো চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীকে পাওয়া যায়নি। গোটা হাসপাতাল ফাঁকা হয়ে গেছে। শ্বাসকষ্ট ও জ্বরের রোগী দেখা অনেকটাই বন্ধ রয়েছে। এ ধরনের রোগীকে পাঠানো হচ্ছে হাসপাতাল থেকে তিন কিলোমিটার দূরে শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণ প্রকল্প এলাকায় স্থাপিত আইসোলেশন ওয়ার্ডে থাকা মেডিক্যাল টিমের কাছে। তাছাড়া চিকিৎসকের দেখা না পেয়ে রোগীদের ফিরে যেতে হচ্ছে বাইরের ক্লিনিকগুলোতে। ফলে রোগী ও রোগীর স্বজনদের দুর্ভোগ বেড়েছে।
আরও পড়ুনঃ ঠাকুরগাঁও জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে মাক্স-সাবান ও লিফলেট বিতরণ
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডা. গাজী রফিক বলেন, ‘আমাদের জন্য সুরক্ষামূলক কোনো ব্যবস্থাই নেই। তাই চিকিৎসকসহ হাসপাতালের প্রত্যেক নার্সসহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ও ভয়ভীতি কাজ করছে। এ অবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। তাই আমরা রোগীর চাপ নিতে পারছি না।’
আরও পড়ুনঃ করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য সিংড়ার বিভিন্ন এলাকায় লকডাউন চলছে
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান ফকির বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে সবাই ভয়ভীতির মধ্যে রয়েছি। চিকিৎসকরা একেবারেই হাসপাতালে আসছেন না, এটা ঠিক নয়। সীমিত সময়ের জন্য তাঁরা রোগী দেখছেন। তাঁরা স্টেশনেই অবস্থান করছেন। যখন যাঁকে ডাকা হবে, তখনই তাঁরা ছুটে আসবেন। চিকিৎসকদের জন্য ইতোমধ্যে পিপিইসহ সব ধরনের সুরক্ষা সরঞ্জাম পেয়েছি। অনেক রোগীও করোনা আতঙ্কে হাসপাতালে আসা কমিয়ে দিয়েছে। জামালপুরে করোনাভাইরাস রোগী এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়নি। শনাক্ত হলে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য নার্সসহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদেরও সুরক্ষা সরঞ্জামের আওতায় আনা হবে।’
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply