বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৮ অপরাহ্ন
পটুয়াখালী থেকে এম কে রানাঃ প্রমত্তা তেঁতুলিয়া নদীর করাল গ্রাস থেকে পটুয়াখালীর বাউফলের ধুলিয়া ও পার্শ্ববর্তী বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপাশা ইউনিয়নকে রক্ষার জন্য একনেকের বৈঠকে ৭৫০ কোটি ২১ লাখ টাকার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের একনেকের পঞ্চম সভায় এই অনুমোদন দেয়া হয়। অনুমোদনের খবর ছড়িয়ে পড়লে বাউফলের ধুলিয়া ইউনিয়ন ও বাকেরগঞ্জের দুর্গাপাশা ইউনিয়নের মানুষের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে। এজন্য তারা প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক চীফ হুইপ আ.স.ম. ফিরোজ এমপিকে দোয়া করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙ্গনে বাউফলের ধুলিয়া ইউনিয়নের গুচরাকাঠি, মঠবাড়িয়া, আদবড়াল, তেঁতুলিয়া, বাসুদেব পাশাা ও ধুলিয়া গ্রামের ৪-৫ হাজার বাড়ি ঘর ও নাজিরপুর ইউনিয়ন ও বাকেরগঞ্জের দুর্গাপাশা ইউনিয়ন নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। প্রায় ১০ হাজার মানুষ ভিটেমাটি হারা হয়েছেন। ইতিমধ্যে শত শত পরিবার তাদের সর্বস্বঃ হারিয়ে সর্বশান্ত হয়েছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা, হাটবাজার, মন্দির, কবরস্থানসহ অনেক স্থাপণা নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের হাত থেকে জাতীয় পর্যায়ের অনেক রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যাক্তিদের কবরস্থানও রক্ষা পায়নি। মাণচিত্র থেকে ধুলিয়া ও দুর্গাপাশা ইউনিয়ন হারিয়ে যাচ্ছিল। বিষয়টি সরকারের দৃষ্টিতে আনার জন্য স্থানীয়রা মানববন্ধন করেছেন।
এরপর ২০১৯ সালের ১৮ মে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল জাহিদ শামীম, জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপ স্থানীয় এমপি আ.স.ম. ফিরোজ, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য অবঃ মেজর জেনারেল হাফেজ মল্লিক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহা পরিচালক খালেকুজ্জামান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণ অঞ্চল জোনের প্রধান প্রকৌশলী জুলফিকার আলীসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি টীম বাউফলের ধুলিয়া এবং বাকেরগঞ্জের দুর্গাপাশা নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। ওই সময় নদী ভাঙ্গন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে এলাকাবাসিদের আস্বস্থ করা হয়েছিল। কিন্তু ভূক্তভোগিরা নদী ভাঙ্গন রোধে কোন পদক্ষেপ দেখতে না পেয়ে সংশ্লিষ্টরা ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর তেঁতুলিয়া নদী পাড়ে স্বরণকালের সর্ববৃহৎ মানববন্ধন করেছিল। এসময় স্থানীয় এমপি আ.স.ম .ফিরোজ নদী ভাঙ্গন রোধে প্রকল্প প্রনয়নের কথা জানিয়েছিলেন।
এরপর জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপ আ.স.ম.ফিরোজ এমপির নিরলশ প্রচেষ্টায় অবশেষে আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের বৈঠকে বাউফল ও বাকেরগঞ্জের নদী ভাঙ্গন থেকে শত শত পরিবার ও তাদের যান মালকে রক্ষার জন্য এই টাকা অনুমোদন দেন। নদী ভাঙ্গ রোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন এমন খবরে ধুলিয়া ও দুর্গাপাশার ছড়িয়ে পড়লে সাধারন মানুষ উচ্ছাস প্রকাশ করে আ.স.ম. ফিরোজকে অভিনন্দন জানান এবং প্রধানমন্ত্রীকে দোয়া করেন।
এবিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় আ.স.ম. ফিরোজ বলেন, দীর্ঘদিন পর্যন্ত এই বিষয়টিকে নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ও দোয়া জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার মা। বাউফলের ধুলিয়াবাসির দীর্ঘদিনের দাবির প্রতি তিনি সম্মান দেখিয়েছেন। তাদের যানমাল রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা নিয়েছেন। আপনারা প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করবেন। এসময় তিনি বলেন, বাউফলের নাজিরপুর ইউনিয়নকে ভাঙ্গন থেকে রক্ষার জন্য প্রকল্প প্রনয়ন করা হয়েছে। শীঘ্রই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply