বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৫ অপরাহ্ন
সিরাজগঞ্জ থেকে এসএম আশরাফুর ইসলাম জয়ঃ— ষোলটি গান ষোলটি সৃষ্টি। শৈলজারঞ্জন মজুমদার নানা কৌশলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে দিয়ে গানগুলো করিয়ে নিলেন। কখনও নানা রাগে গান সৃষ্টির কথা বলে, কখনও বর্ষার নতুন বিষয়ে গান তৈরির বায়নায়। আর এভাবেই যখন ষোলটি গান সৃজন পূর্ণ হল তখন সেটি সমষ্টি হয়ে পরিণত হল গীতি-আলেখ্য ‘বর্ষামঙ্গল’-এ, যা প্রথম পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রনাাথ ঠাকুরের জীবদ্দশায় ১৯৩৯ সালে। সেই বর্ষামঙ্গলই ২০১৯ সালে এসে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম. মনসুর আলী অডিটোরিয়ামে মঞ্চে উপস্থাপিত হল নৃত্যালেখ্য রূপে।
বর্ষনির্ভর ষোলটি গানের সঙ্গে যুক্ত হল নাচের মুগ্ধকর পরিবেশনা আর নেপথ্যে উচ্চারিত হল প্রতিটি গানের সৃষ্টিকথা। পুরো পরিবেশনায় অংশ নিলো কলকাতার শান্তিনিকেতনের শিল্পীরা। অডিটোরিয়ামে ভর্তি দর্শক শ্রোতার উপভোগ করলেন ৩ ঘণ্টার এক রবীন্দ্রময় সন্ধ্যা।
সিরাজগঞ্জ শহীদ এম. মনসুর আলী অডিটোরিয়ামে রবিবার সন্ধ্যায় এই পরিবেশনাটির আয়োজন করে জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিসদ্, সিরাজগঞ্জ।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একান্ত সহচর সঙ্গীতগুরু আচার্য শৈলজারঞ্জন মজুমদারের ১১৯তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে এ নৃত্যালেখ্যটি পরিবেশিত হয়।
প্রধান অতিথি ছিলেন, কবির বিন আনোয়ার, পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের মাননীয় সচিব। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, টুটুল চক্রবর্তী বি পি এম পুলিশ সুপার, সিরাজগঞ্জ। টি এম সোহেল অধ্যক্ষ সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ। করুণা রাণী সাহা প্রাক্তন অধক্ষ সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ। এস এম বি বিপ্লব পরিচালক রবির কিরণে শৈলজারঞ্জন ও কর্ণধার- চয়নিকা। এছাড়াও বিশ্বভারতীর দুই সাবেক ভিসি ড. সুজিত কুমার বসু ও ড. স্বপন কুমার দত্ত এবং উপমহাদেশের প্রখ্যাত মনিপুরী নৃত্যগুরু গুরু শ্রীমতি মিনাক্ষী বসু।
সভাপতিত্ব করেন ডঃ ফারুক আহাম্মেদ, জেলা প্রসাশক সিরাজঞ্জ এবং অনুষ্ঠানটি উদ্বোধক করেন ডঃ জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী, সভাপতি জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিসদ্, সিরাজগঞ্জ। সঞ্চালাক ছিলেন নূরে আলম খান হীরা সাধারন সম্পাদক জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিসদ্, সিরাজগঞ্জ।
আয়োজনের শুরু হয় সিরাজগঞ্জের শিল্পীদের পরিবেশনায় শতকন্ঠে ‘সুরের গুরু দাও দাও সুরের দীক্ষা’ সমবেত সঙ্গীতে। এরপর ছিল নাতিদীর্ঘ আলোচনা পর্ব। আর তার পরই ছিল বর্ষামঙ্গল নৃত্যালেখ্যের পরিবেশনা। মঞ্চের পেছনের সারিতে বসেছিলেন সঙ্গীতশিল্পীরা। তাদের সঙ্গে দু’জন ধারাভাষ্যকার যারা গানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরছিলেন। আর তার পরপরই গানটির পরিবেশনার সঙ্গে যুক্ত হয় নাচের অভিব্যক্তি। সবগুলো গানই ছিল নানা রাগে সৃষ্ট বর্ষা ও বর্ষাকালকে ঘিরে।
রবীন্দ্রনাথের নির্দেশনায় যে যন্ত্রগুলো ব্যবহৃত হয়েছিল সেগুলোর আশ্রয়েই এগিয়ে যায় পরিবেশনা পর্ব। গানের সুরের সঙ্গে চলে নাচের দোলা। প্রথম গানটি ছিল ‘ওগো সাঁওতালি ছেলে’। এরপর একে একে পরিবেশিত হয় ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’, ‘আজি তোমায় আবার চাই সোনাবারে’, ‘এসো গো জ্বেলে দিয়ে যাও প্রদীপখানি’, ‘শ্রাবণের গগনের গায়’, ‘আজি ঝরঝর মুখর বাদর দিনে’, ‘স্বপ্নে আমার মনে হলো’, ‘এসেছিলে তবু আসো নাই’, ‘এসেছিনু দ্বারে তব শ্রাবণও রাতে’, ‘নিবিড় মেঘের ছায়ায় মন দিয়েছি মেলে’, ‘পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে’, ‘সগনও গহনও রাত্রি’, ‘ওগো তুমি পঞ্চদশী’, ‘রিমিক ঝিমিক ঝরে’সহ ষোলটি গান। গানগুলো গেয়ে শোনান শিখা চ্যাটার্জী, শুভশ্রী বসু ও ড. মানস ভূল। তাদের গাওয়া গানের সুরে নৃত্য পরিবেশন করেন তন্ময় পাল, কৃষ্ণেন্দু দে, সহলেী নন্দী, ঐন্দ্রিলা পাল ও তানিসা সিংহ। প্রতিটি গানের নেপথ্য গল্প তুলে ধরেন স্বপ্না দে ও শাশ্বতী গুহ। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন ড. সুমিত বসু। যন্ত্রবাদনে অংশ নেন তবলা ও খোলে চঞ্চল নন্দী, এস্রাজ বাদক সৌগত দাস। জাতীয় সঙ্গীতের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় এ আয়োজন।
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply