মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৯ অপরাহ্ন
ইবি থেকে মুতাছিম বিল্লাহ রিয়াদঃ দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের প্রবল বন্যায় বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সর্বস্তরের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা। অগণিত ঘরছাড়া মানুষ খাদ্য, বস্ত্র ও ওষুধের অভাবে যখন মানবেতর জীবন যাপন করছে, তখন মানবিকতার ডাকে সাড়া দিয়েছেন পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা সমিতি বন্যার্তদের সহায়তায় তাদের একদিনের বেতন প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে জমা দেবেন বলে জানিয়েছে। শনিবার (২৪ আগস্ট ২০২৪ইং) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এবং কর্মকর্তা সমিতি থেকে পাঠানো পৃথক দুই প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশের উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এলাকার বেশ কয়েকটি জেলা সহসা প্রবল বন্যার কবলে পড়ে চরম মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। অগণিত মানুষ খাদ্য, বস্ত্র ও ওষুধের অভাবে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। এমতাবস্থায় ইবি শিক্ষক সমিতির সদস্যবৃন্দের এক দিনের বেতন কর্তন করে সমূদয় টাকা প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে জমাদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে একই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারাও। কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদ ওয়ালিদ হাসান মুকুট বলেন, দেশের ক্রান্তিলগ্নে ইবি কর্মকর্তারা সবসময় পাশে থাকে। আমরা একদিনের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ বন্যাদূর্গতদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে প্রদান করবো। সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় ও সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে শিক্ষার্থীরাও বিভিন্নভাবে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন বিভাগ, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যানারে গত বৃহস্পতিবার থেকে ক্যাম্পাসসহ কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ এলাকা থেকে নগদ অর্থ, পোশাক ও খাবারসামগ্রীসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করছেন শিক্ষার্থীরা। অনেকে আবার ব্যক্তিগত উদ্যোগে পোশাক, শুকনো খাবার, ঔষধ ইত্যাদি সংগ্রহ করে বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠাচ্ছেন। তহবিল সংগ্রহ ছাড়াও বিশ^বিদ্যালয়ের কয়েকটিম টিম বন্যা দূর্গত এলাকায় গিয়ে বিপর্যস্থ মানুষের উদ্ধারে কাজ করছেন।
এ ছাড়া জন্মাষ্টমী উৎসবের খরচ কমিয়ে বন্যার্তদের সহায়তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পূজা উদযাপন পরিষদ। এ ছাড়া এবার উৎসবের দিনে কোন শোভাযাত্রাও করবে না বলে জানিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের মানুষের এই মানবিকতার পরিচয় প্রশংসা কুড়াচ্ছে সব মহলে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুকান্ত দাস বলেন, যতটা সম্ভব কৃচ্ছ্রসাধন করে জন্মাষ্টমী উদযাপন করা এবং সেখান থেকে একটা অংশ বন্যার্তদের সাহায্যের ফান্ডে দেয়া হবে। পূজার দিন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সকলের আত্মার শান্তি কামনা করে প্রার্থনা করা হবে। পূজা মণ্ডপের সামনেও বক্স থাকবে, কেউ চাইলে পূজার দিন অর্থ সহায়তা দিতে পারবে। পূজার দিন বিকালে সব টাকা একত্রিত করে বিশ্বস্ত মাধ্যমে বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য পাঠানো হবে। একটা কথা মনে করিয়ে দেই, আমরা একদমই দান করছি না। আমাদের ভাইবোনদের বিপদে পাশে দাঁড়াচ্ছি।
রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ত্রাণসামগ্রী বন্যার্তদের সাহায্যে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট। তিনি বলেন, বন্যার্তদের সহযোগিতায় আমাদের গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি চলছে। যার যার জায়গা থেকে বন্যার্তদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শিক্ষক সমিতিরি সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা বিভিন্ন ক্রান্তিকালে এই ধরণের সহযোগিতা করে এসেছি। ইবি শিক্ষক সমিতি সব সংকটেই এটা করে থাকে।
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply