বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৯ অপরাহ্ন
সিরাজগঞ্জ (কাজিপুর) থেকে মোহাম্মদ আশরাফুলঃ— আধুনিক সভ্যতায় মানুষ যেখানে উন্নত জীবন-যাপন করছে ঠিক সেখানে ভাসমান জেলেরা অভাবের তারণায় সংসার চালাতে প্রচন্ড শীতেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে যমুনা নদীতে। শুধু তাই নয়, জীবন সংসার চালাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে বিভিন্ন ভাবে। যমুনায় জেগে উঠেছে অসংখ্য ডুবোচর। মিলছেনা পর্যাপ্ত মাছ। এরপরও হাড় কাঁপানো শীতে যমুনায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কাজিপুরের জেলেরা। রাতের অন্ধকার কেটে আলো ফোটার আগেই যমুনার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত পর্যন্ত চষে বেড়ায় পেটের তাগিদে। এভাবেই যমুনা নদীতে জেলেদের হাসি-কান্না জমে থাকে নৌকায়।
আরও পড়ুনঃ শিবপুরে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক পাচ্ছেন শিশু শিল্পী রাতিন
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কেউ ছেঁড়া জাল মেরামত করছে, কেউ করছেন রান্নার কাজ, কেউবা আবার ঘুমাচ্ছেন নৌকার উপর। এই জেলেরা ১৫ থেকে ২০ দিনের জন্য নৌকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় মাছ ধরতে। বাড়ি থেকে বের হবার পর নৌকাতেই শুরু হয় রান্না-খাওয়া ও ঘুম। এমন দৃশ্য চোখে পড়ে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার যমুনা নদীতে।
আরও পড়ুনঃ দিনাজপুর ফুলবাড়ীতে বোরো চাষাবাদে ব্যস্ত কৃষকরা
এদিকে মাছ ক্রয় করতে আসা ক্রেতারা বেশ কয়েক জন ছোটাছুটি করছে মাছ কিনতে। তারা বলছেন, শুনেছি এখানে সস্তায় যমুনার টাটকা দেশীয় বিভিন্ন ধরণের মাছ পাওয়া যায়। তাই মাছ কিনতে চলে এসেছি। অপর দিকে জেলে পরিবাররা শিক্ষা-দীক্ষা ও অর্থনৈতিক দিক থেকে এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে। পেটের দায়ে প্রত্যেক নৌকাতে প্রায় ৮/১০ জন জেলে থাকে। নদীর জলে ভেসে ভেসে কাটিয়ে দিচ্ছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম। ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত জীবনযুদ্ধে লড়ছে তারা। সুর্য্য উঠার আগেই নৌকা নিয়ে বের হয় মাছ ধরতে। নদীর বিভিন্ন এলাকায় মাছ ধরা শেষে বিকেলে ফিরে আসে কাজিপুর উপজেলার বাজারের মাছের আড়তে। নদীপাড়ের স্থানীয় বাজারে মাছ বিক্রি করে পাওনাদারদের দেনা পরিশোধ ও খাবার সামগ্রী ক্রয়ের পর তাদের হাতে জৎসামান্য কিছু থাকে। সেই অর্থেই তাদের বাড়িতে চলে সংসার ও ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া।
আরও পড়ুনঃ সচেতনতার বাণী নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে ছুঁটছেন ঠাকুরগাঁও- ‘সদর থানার ওসি’
এই সকল জেলেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নদী এখন শুকিয়ে মাঝে মাঝে ডুবোচর পড়েছে। আবার কোথাও পলি জমে নালায় পরিণত হয়েছে। এ কারণে বর্তমানে মাছের আকাল। মাছ ধরা না পরায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন এই জেলেরা।
জেলেরা আরো বলেন, নদীতে পর্যাপ্ত মাছ জালে পড়ছে না। এ নিয়ে চিন্তায় আছি। সপ্তাহে কিস্তি ও বাড়ীতে বউ পোলা আছে। যে পরিমান মাছ পাচ্ছি তাতে আমাদের কোন রকম খেয়ে না খেয়ে দিন পার হচ্ছে। তার পরেও জালে যদি বড় মাছ পড়ে। সেই মাছ এলাকার প্রভাবশালীরা দাম মাত্র দিয়ে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ ধামরাইয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বাস খাদে পড়ে আহত-১০
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি মোঃ সুরুতজামান জানান, যমুনা নদীতে বর্তমানে ডুবোচর পড়ায় মাছ কম ধরা দিচ্ছে। যদি নদী খনন করে নাব্যতা ফিরে আনা যেত তবে এই সব জেলেদের হয়তো আর মানবেতর জীবন যাপন করতে হতো না।
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply