বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫২ অপরাহ্ন
নাটোর (গুরুদাসপুর) থেকে মেহেদী হাসান তানিমঃ— আমির আলী। নাটোরের গুরুদাসপুরের নাজিরপুর ইউপির চন্দ্রপুরের বাসিন্দা। তিন সন্তানের জনক তিনি। এছাড়া ওয়াবদা বাজারের আমির আলী সুপার মার্কেটের মালিক। কিন্তু মানসিক ভারসাম্য হারানোর পর টয়লেটের পাশে নোংরা ঘরে ১০ বছর ধরে শিকলবন্দী রেখেছে তার তিন সন্তান ও স্ত্রী। অবশেষে বুধবার রাতে গুরুদাসপুরের ইউএনও মোঃ তমাল হোসেন শিকলবন্দী আমিরকে উদ্ধার করেছেন। পরে তাকে একটি ভালো ঘরের ব্যবস্থা করে দেন তিনি।
আমির আলীর ভাগনে আঃ রহিম জানান, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে তার মামা আমিরকে কোনো চিকিৎসা ছাড়াই টয়লেটের পাশে নোংরা ঘরে শিকলবন্দী করে রাখে তার ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রী।
শিকলবন্দী আমির আলীর ছেলে মঞ্জু আলী ও স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, মানসিক ভারসাম্যহীন আমিরকে ১৪ বছর আগে পাবনার মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। তাই শিকলবন্দী করে রাখা হয়। তারপর আর কোনো চিকিৎসা করানো হয়নি। আমিরকে নোংরা ঘরে বন্দী রাখার ভুল শিকার করেছেন তারা। পরে ইউএনও’র নির্দেশে ভালো একটি ঘরে তাকে রাখা হয়েছে।
ইউএনও মোঃ তমাল হোসেন জানান, দীর্ঘ ১০ বছর আমির আলীকে তার পরিবারের লোকজন একটি অস্বাস্থ্যকর কুঁড়ে ঘরে শিকলবন্দী করে রেখেছিল। সেই ঘরে বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি জমতো। শুধু তাই নয়, যে ঘরে আমির আলীকে বন্দী করে রাখা হয়, তার শোয়ার স্থানের পাশে টয়লেট স্থাপন করা হয়। যে পাত্র দিয়ে টয়লেটের কাজ সারতেন তিনি, সেই পাত্র দিয়ে পানিও পান করতেন। ভাঙা কুড়ে ঘরে টয়লেট, গোসল, খাবারসহ পোকা মাকড়ের কামড় খেয়ে ১০ বছর কাটিয়েছেন তিনি। বুধবার সন্ধ্যায় আমির আলীর ঘটনা সাংবাদিক নাজমুল হাসান নাহিদ তাকে জানান। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে আমিরকে উদ্ধার করে তারই বাড়িতে ভাল একটি ঘরে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে এ রকম অমানবিক কাজ করলে পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply