শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৮ অপরাহ্ন
রাবি (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে উজ্জ্বল হোসেনঃ— আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি। ঊনসত্তুরের গণঅভ্যূত্থানকালে এই দিনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহা প্রক্টরের দায়িত্ব পালনকালে পাকিস্তানী সেনাদের গুলিতে নিহত হন। তিনিই এদেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী। দিনটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শিক্ষক দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
আরও পড়ুনঃ রাবিতে সপ্তাহব্যাপী গ্রন্থমেলা শুরু
প্রতিবারের মতো এবারো দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দিবসের কর্মসূচিতে মঙ্গলবার ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনসহ অন্যান্য ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৭টায় উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান, উপ-উপাচার্য প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহা, উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী মোঃ জাকারিয়াসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ শহীদ ড. জোহার সমাধি ও জোহা স্মৃতিফলকে পুস্পস্তবক অর্পণ করে এক মিনিট নীরবতা পালন ও মোনাজাত করেন। সেখান অন্যদের মধ্যে কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর এম এ বারী, ছাত্র-উপদেষ্টা প্রফেসর লায়লা আরজুমান বানু, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রভাষ কুমার কর্মকার, প্রক্টর প্রফেসর লুৎফর রহমান, অনুষদ অধিকর্তা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলন।
এরপর রসায়ন বিভাগ ও শহীদ শামসুজ্জোহা হলসহ অন্যান্য আবাসিক হল, বিভাগ, পেশাজীবী সমিতি ও ইউনিয়ন প্রভাতফেরিসহ শহীদ জোহার সমাধি ও স্মৃতিফলকে পুস্পস্তবক অর্পণ করে।
এদিন সকাল ১০টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত হয় জোহা স্মারক বক্তৃতা। এতে ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক বক্তৃতা করেন রাবির সাবেক উপাচার্য এবং যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার প্রফেসর এম সাইদুর রহমান খান। রসায়ন বিভাগের সভাপতি প্রফেসর মো. বেলায়ত হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান এবং উপ-উপাচার্য প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহা ও উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী মো. জাকারিয়াও বক্তৃতা করেন ।
স্মারক বক্তৃতায় প্রফেসর এম সাইদুর রহমান খান বলেন ‘তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে ‘ডিজিটাল বাংলাদশ’ একটি প্রত্যয়, একটি স্বপ্ন, যা সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদশে সবচেয়ে আলাচিত বিষয়। তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার একটি দেশকে দারিদ্রমুক্ত, কর্মসংস্থান ও জাতীয় উনয়নের চরম শিখরে পৌঁঁছে দিতে পারে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বস্তুত জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রথম সোপান। একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য যে সমৃদ্ধি ও উন্নত জীবন প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলাম, ডিজিটাল বাংলাদশ আমাদের সেই স্বপ্ন পূরণ করবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আর্থ-সামাজিক উনয়নে অবাধ তথ্য প্রবাহের যে ভূমিকা তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। তবে একটি দিকে খেয়াল রাখতে হবে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উৎকর্ষতা, উদ্ভাবন এবং সুফলটুকু শুধুমাত্র ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে চলবে না। এই সম্ভাবনাময় প্রযুক্তিকে সুদূরপ্রসারী করতে পৌঁছে দিতে হবে গণমানুষের আঙিনায়। একে সহজলভ্য করতে ভূমিকা রাখতে হবে সরকারের নীতি নির্ধারক মহলকে, এগিয় আসতে হবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহকেও।
স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে শহীদ জোহার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয় এক মিনিট নীরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়। সেখান শহীদের জীবনালেখ্যও উপস্থাপন করা হয়।
দিবসের কর্মসূচিতে আরো ছিলো অফিসার সমিতি কার্যালয়ে আলাচনা সভা, বাদ জোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরআনখানি ও বিশেষ মোনাজাত, শহীদ শামসুজ্জোহা হলে দোয়া মাহফিল, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী। এ দিন শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য খোলা রাখা হয়। বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করে।
এদিকে দিবসটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে শিক্ষক দিবসের স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে নানা কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। সবার দাবি দিবসটিকে যেনো রাষ্ট্রীয়ভাবে শিক্ষক দিবস ঘোষণা এবং পালন করা হয়।
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply