বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৫ অপরাহ্ন
মোঃ আমিনুল ইসলামঃ— গোটা বিশ্ব আজ নভেল করোনা ভাইরাসের (COVID-19) মারাত্বক প্রাদুর্ভাব আর ভয়াবহতায় বেসামাল। উদ্বেগ উৎকন্ঠা আর দুশ্চিন্তায় নিদ্রাহীন মানুষগুলো। কী ইউরোপ। কী আমেরিকা। নামীদামী সব শহরগুলো যেন একেকটা শশ্মান। মরনব্যাধি ঘাতকে অসহায় নিরপরাধ সব মানুষ। বেঁচে থাকাটা যেন এখন মরিচীকা। দুঃস্বপ্ন। দিন দিন তার ভয়ংকর থাবা বেড়েই চলেছে। এ মহামারী যেন থামানো যাচ্ছে না কোনভাবেই। এখানে সেখানে পরে আছে হতভাগ্যদের নিথর দেহ।
প্রাণঘাতী এই করোনা ভাইরাস আঘাত হেনেছে আমার প্রিয় বাংলাদেশেও। সবচাইতে বেশি সংখ্যক আক্রান্ত রাজধানী ঢাকা। এরপরই আমার প্রাণের শহর নারায়ণগঞ্জ। সরকার ইতোমধ্যে এ জেলাটিকে লকডাউন ঘোষনা করছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয়- এ লকডাউন কেউ কেয়ার করছেনা। মানছেনা।বলতে গেলে লকডাউন এখানে কুলডাউন মেজাজে আছে।
সরকার প্রশাসনের সহায়তায় নানাভাবে জনগনকে ঘরে রাখতে চেষ্টা করছে। তারপরও অসচেতন মূর্খ জাতি আমরা সেদিকে কান দিচ্ছি না। কর্ণপাত করছিনা। যা হবার তাই হবে। এদেশে কিছু হবেনা ইত্যাদি ইত্যাদি বলে হাওয়ায় উঁড়ায়ে দিচ্ছি। অনেকটা উৎসবের আমেজে আড্ডা চলছে কী চায়ের দোকানে। সেলুনে। মহল্লার দোকানগুলোতে। কোন কারন ছাড়াই মহল্লার ছেলেপেলে অলিগলিতে জটলা পাকাচ্ছে। দলাদলি করছে। বুকভরা সাহস নিয়ে ঘোরাঘুরি করছে।
যেখানে বারবার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হচ্ছে সেখানে আমরা আরও ঠেলাঠেলি করে গাদাগাদি করে স্বাভাবিক দিনগুলোর মতো করে বাজার করছি। মাছ বাজার কিংবা সব্জিবাজার গুলোতে ঘোরাঘুরি করছি। কি হবে এ অশিক্ষিত অসচেতন জাতির?
অন্যান্য জনপ্রতিনিধি বা কাউন্সিলর বিশেষ করে আমাদের ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জনাব রুহুল আমিন মোল্লা বারবার কখনও মসজিদের মাইকে। কখনও স্বেচ্ছাসেবক পাঠিয়ে। কখনও বা নিজে মহল্লায় মহল্লায় গিয়ে মানুষজনকে বের হতে নিষেধ করছেন। খেয়ে না খেয়ে দিনরাত পরিশ্রম করছেন। কিভাবে এলাকাটি ভাল রাখা যায়। করোনা মুক্ত রাখা যায়। ভাল রাখা যায় এলাকার মানুষজনকে। কিন্তু কে শুনে কার কথা। চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী। উল্টো বাজে কথা শুনতে হয়েছে।
এখানে একটি কথা না বললেই নয়। বর্তমানে করোনা আতংকে দেশের অপরাধ প্রবনতা কমে গেছে অনেকাংশেই। আইন শৃঙ্খলাবাহিনী বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীকে আগের মত ততটা ব্যস্ত থাকতে হয়না বলে আমার ধারনা। সেনাবাহিনী বলেন বা পুলিশ বাহিনীই বলেন। তাদেরকে দেখা যাচ্ছে প্রধান প্রধান সড়কে। যেমন চাষাড়া গোল চত্বর বা রাইফেল ক্লাবের আশপাশে। আমার কথা হলো যদি ওনারা বিশেষ করে পুলিশের একটি গাড়ি প্রতিটি মহল্লার ভিতরের রাস্তায় রাস্তায় একবার করে রাউন্ড দিতো তাহলে লকডাউনের কার্যাকারিতা দেখা যেতো।
বিশেষ করে আমি যে এলাকায় থাকি নতুন আইলপাড়া, পাঠানটুলী, এনায়েত নগর, চৌধুরীবাড়ি, লাকিবাজার, ২ নং গোদনাইল সহ ঐদিকের এলাকাগুলো। যে কথা অনেকবার মাননীয় কাউন্সিলর মহোদয় ও অনেকবার ব্যক্ত করছেন। উষ্মা প্রকাশ করেছেন। আমিও পুলিশের একটি পেট্রোল ডিউটির কথা বলেছিলাম একটি এঙ্গেল থেকে। হয়তো বলাও হয়েছিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। তাহলে অন্ততঃ মহল্লার মানুষ ভয় পেত। ঘরে থাকতো। আমরা লকডাউনের সুফল পেতাম। তা না হলে যে নারায়নগঞ্জে লাশের মিছিল দেখতে হবে।
সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। করজোড় মিনতি। একটু চেষ্টা করে দেখিনা। যতটা সম্ভব প্রধান সড়কগুলোর পাশাপাশি মহল্লার অলিগলিতে ও আমরা মাত্র কটা দিন সময় দেইনা! দেখিনা তার সুফল আনতে পারি কিনা। ঘরে বসে থেকে সামনের দিনগুলোতে আমাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে সে আতংক আর দুশ্চিন্তায় কোন কুল কিনারা পাচ্ছিনা?
লেখকঃ
ব্যাংকার ও কলামিস্ট
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply