শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৬ অপরাহ্ন
ঠাকুরগাঁও থেকে আসিফ জামানঃ— ঠাকুরগাঁও শহরের ক্লাসিক ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। মৃত ফজিলা বেগম (৪৫) সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের ফাড়াবাড়ির ছুট বঠিনা গ্রামের দুলাল ইসলামের স্ত্রী।
সোমবার দুপুরে ওই রোগীকে মৃত ঘোষণা করা হয় বলে জানান ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক তওসীফ বিন মামুন।
দুলাল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, কিছুদিন ধরে তার স্ত্রী জ্বর ও পেটের নিচে ডানপাশে প্রচণ্ড ব্যথায় ভুগছিলেন। গত শুক্রবার তার স্ত্রীকে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে অবস্থিত ক্লাসিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে সার্জারির ডাক্তার জাহাঙ্গীর আলমকে দেখানো হয়। এ সময় ডাক্তার জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রীর রক্ত, আল্ট্রাসোগ্রামসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। এরপর ওই ডাক্তার তার স্ত্রীকে ওষুধ দিয়ে তিনদিন পর আবার তার চেম্বারে দেখাতে বলেন।
দুলাল ইসলাম আরও বলেন, সোমবার দুপুর ২টার দিকে ক্লাসিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে আবার ডাক্তার জাহাঙ্গীর আলমের কাছে তার স্ত্রীকে দেখানো হয়। এ সময় তিনি কফ পরীক্ষা করতে বললে কফ পরীক্ষা শেষে রিপোর্ট এনে ডাক্তারকে দেখানো হয়। ওইসময় ডাক্তার জানান তার স্ত্রী যক্ষ্মায় আক্রান্ত হননি এবং তার কাছে এই চিকিৎসা নেই। তিনি রোগীকে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে নিতে বলেন।
পরক্ষণেই ওই ডাক্তার একটি কাগজে লিখে দেন সিরিঞ্জ আনার জন্য। ডাক্তারের কথামতো আমরা ওষুধের দোকানে গিয়ে সিরিঞ্জ এনে ডাক্তার জাহাঙ্গীরকে দিই। এরপর ডাক্তার জাহাঙ্গীর তার চেম্বারেই আমার স্ত্রীর ডান পেটের নিচ অংশে ওই সিরিজ ঢুকিয়ে পানি বের করার চেষ্টা করেন। পানি বের না হয়ে অনেক রক্ত বের হয়; সাথে নাক ও মুখ দিয়েও রক্ত বের হতে শুরু হয়।”
ফজিলা বেগমের অবস্থা খারাপ হলে তাকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে দুলাল জানান।
সদর হাসপাতালের চিকিৎসক তওসীফ বিন মামুন বলেন, ওই নারীকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। তারপরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা ইসিজিসহ বেশ কিছু পরীক্ষা করি; কিন্তু এতে রোগীর কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই ওই রোগীকে মৃত ঘোষণা করা হয়।”
কী কারণে ওই রোগী মারা যেতে পারে এমন প্রশ্নে চিকিৎসক তওসীফ বিন মামুন বলেন, এটা পরীক্ষা-নীরিক্ষা ছাড়া বলা সম্ভব নয়, মৃত নারীর লাশ ময়নাতদন্ত করা হবে, এরপরই বলা যাবে কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
সার্জারি ডাক্তার জাহাঙ্গীর আলমের ভুল চিকিৎসায় ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন তার স্বামী দুলাল ইসলাম। তিনি ওই ডাক্তারের শাস্তি দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জাহাঙ্গীর আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম বলেন, ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে এমন খবর পেয়ে সদর হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়ে রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি; অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন মাহফুজুর রহমান সরকার বলেন, চিকিৎসকের ভুলে রোগীর মৃত্যু বিষয়টি দুঃখজনক। তদন্ত সাপেক্ষে ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply