বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৩ অপরাহ্ন
বেতাগী (বরগুনা) থেকে অলি আহম্মেদঃ বরগুনার বেতাগীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী, জ্বর-সর্দি ও ডায়েরীয়ার মতো উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের চিকিৎসায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ রবীন্দ্র নাথ সরকারই (৩০) ভরসা। করোনায় আক্রান্তদের দেখভালের পাশাপাশি মেডিসিন ওয়ার্ডের নিয়মিত চিকিৎসা এবং হাসাপতালের অন্য সহকর্মীদের পরামর্শ ও সহযোগিতা করছেন তিনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ২ মাস ২৭ দিন ধরে একটানা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন এই সম্মুখযোদ্ধা।
জানা গেছে, রোগীদের মানসিক শক্তি ও সাহস জোগাতে কাউন্সেলিং করছেন তিনি। হাসপাতালের বাইরে নিজের অর্থে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে করোনার উপসর্গ নিয়ে হোমকরোন্টাইনে থাকা লোকদেরও দোরগোড়ায় গিয়ে সেবা দিচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, এ জনপদে গত ১৮ মার্চ করোনার প্রাদুভার্ব শুরু হওয়ার পর থেকে আইসোলেশন ওয়ার্ডের দায়িত্ব অর্পিত হয় তার উপর। সেই থেকে উপকূলীয় এ জনপদে করোনায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যসহকারী ও পুলিশ সহ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১৩ জন আক্রান্ত হলেও এর মধ্যে ১জনের মৃত্যু হয়। ৩১২ জনকে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক করোন্টাইন এবং আইসোলেশনে রাখা হয়। নমুনা পরীক্ষায় করা হয় ২২৭ জনের । করোনার ভেতরেই গত ২০ এপ্রিল থেকে হঠাৎ করে ডায়েরীয়া মহামারী আকারে ধারণ করে ৫ জনের মৃত্যু ঘটে। সরকারি হিসেবে ৭৮০ জন ডায়েরীয়ার প্রকোপে আক্রান্ত হয়। এই সময়টায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তিনি সেবা দেন।
তার পরিবারে রয়েছে মা, বাবা, স্ত্রী. একমাত্র ছেলে, বোন ৩ জন থকেন বাহিরে। বৃদ্ধ বাবা ডায়াবেটিসে আর মা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ায় তাদের দেখভালের দায়িত্ব তার উপর। দেশের দুর্যোগে পরিবারের কথা ভেবে নিজেকে গুটিয়ে রাখেতে মন সায় দেয়নি তার। মানুষ মারাগেলেও করোনায় খোদ হাসপাতালের এক চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ার পর আতঙ্কের কারনে ভয়ে এ হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক রোগীকে সেবা দিতে চাননি। এমন অভিযোগের মাঝেও ডাঃ রবীন্দ্র নাথ সরকার ভয় না করে সাহসের সাথে এগিয়ে চলেন তিনি। চিকিৎসকের দায়িত্ব কর্তব্যে হিসেবে টিএইচ ও সিভিল সার্জনের দিক নিদের্শনায় রোগীকে উৎসাহ উদ্দীপনা দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন। রোগীরাও ভয়ে হাসপাতালে না আসতে চাইলেও জরুরী সেবার রোগীদের বুঝিয়ে তাদের হাসপাতাল মুখী করছেন। এর আগে তিনি দুর্গম পাহাড়ী জনপদ বান্দরবনের রুমা উপজেলয় কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকে গত ২৬ ডিসেম্বর এখানে যোগদান করেন।
ডাঃ রবীন্দ্র নাথ সরকার বলেন, ‘মানুষের জীবনটাই বড়। তাকেই আমি প্রধান্য দিতে চাই। কাজকে আমি কষ্ট মনে না করে ইন জয় করি। তাই রোগীর জীবন বাঁচাতে যে কোন ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তত।’
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply