বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১১ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি....
“সরকারের দিক-নির্দেশনা মেনে চলি, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করি।” অনলাইন নিউজ পোর্টাল “আজকের দিগন্ত ডট কম” এর পক্ষ থেকে আপনাকে জানাচ্ছি স্বাগতম , সর্বশেষ সংবাদ জানতে এখনই ভিজিট করুন “আজকের দিগন্ত ডট কম” (www.ajkerdiganta.com) । বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য পরিশ্রমী, মেধাবী এবং সাহসী প্রতিনিধি আবশ্যক, নিউজ ও সিভি পাঠানোর ঠিকানাঃ-- ajkerdiganta@gmail.com // “ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, আসুন আমরা মাদক’কে না বলি”
সংবাদ শিরোনাম....
সাভারে বিভিন্ন এলাকায় জরিমানাসহ অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন ঠেকানো যাচ্ছে না গাজিপুরে অবৈধ গ্যাস সংযোগ, কঠোর অবস্থানে তিতাস কর্তৃপক্ষ শিবপুরে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান গাজিপুরের বিভিন্ন এলাকায় পুনবায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন জোবিঅ-আশুলিয়া আওতাধীন কা‌শিমপু‌রে বি‌ভিন্ন এলাকায় তিতাসের অ‌ভিযান কাশিমপুরে বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন কাশিমপুরে বিভিন্ন এলাকায় তিতাসের অভিযান এবং অভিযানকৃত সাশ্রয়কৃত গ্যাসের আনুমানিক মূল্য ৫১,৩৭৮ টাকা (দৈনিক ভিত্তিক)  মানিকগঞ্জ ঘিওরে বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ‘শহীদি মার্চ’ উপলক্ষ্যে ইবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল মানবতার ডাকে সাড়া দিলো ইবির সর্বস্তরের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা

একজন মাস্টার দম্পতির সংগ্রামী, আলোকদীপ্ত ও বর্ণাঢ্য জীবনের গল্প

একজন মাস্টার দম্পতির সংগ্রামী, আলোকদীপ্ত ও বর্ণাঢ্য জীবনের গল্প

 

বড়াইগ্রাম (নাটোর) থেকে মেহেদী হাসান তানিমঃ নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার, গোপালপুর ইউনিয়নের, নারায়ণপুর স্কুলের লাগোয়া উত্তর পাশে, মাস্টার পাড়া নামে প্রসিদ্ধ এক দাপুটে মাস্টার, আব্দুস সাত্তার সরকার সাহেবের বাড়ি। ৭০ এর দশক থেকে ২০০০ পর্যন্ত এই ৩০ বছরে একজন স্বনাম ধন্য স্কুল মাস্টার হিসেবে ঐ অঞ্চলে তিনি ছিলেন অদ্বিতীয়। উনার প্রিয়তমা সহ ধর্মীনি হাজেরা বেগম; পার্শ্ববর্তী গড়মাটি গ্রামের সুপ্রসিদ্ধ মৌলভী মোঃ হাফিস উদ্দিন সাহেবের আদরের বড় সন্তান।

এই সাত্তার মাস্টার এবং হাজেরা দম্পতির ঘরে একে একে ৯ জন রত্না সুস্থ ও সুন্দর ভাবে এই পৃথিবীর আলো দেখতে সক্ষম হয়। জনাব মাস্টার মশাই নিজ পরিবারে ভাই বোনদের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়, তাই তাকে প্রথম পর্যায়ে ভাই বোনদের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এরপর যত সময় গড়িয়েছে তার দায়িত্ব ভার আরো ভারি হয়েছে। কালের নিয়ম অনুযায়ী এক সময় সংসার বিভাজন হলেও তার নিজ কন্যাদের পড়া লেখার খরচ জোটাতে তাকে হিমসিম খেতে হয়েছে। যেহেতু তিনি পেশায় ছিলেন একজন শিক্ষক তাই পড়া লেখা শিখে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে তার কন্যারা রাষ্ট্রের বড় পদে আসিন হবেন এটা ছিলো তার লালিত স্বপ্ন। আর এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য কন্যাদের কে স্কুল কলেজে কৃতিত্বের সাথে পার করিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জনের জন্য প্রত্যেক কন্যাকেই সুযোগ করে দেন।

আর এই সুযোগ দিতে গিয়ে তাকে প্রতি মুহূর্তে ছুটতে হয়েছে অর্থের পিছনে, সে এক বিরামহীন ছুটে চলা। শিক্ষকতার অবসরে যে সময় টুকু পেতেন তার একটা বড় সময় ব্যয় করতেন টিউশনি করে। আর ছুটির দিনগুলোতে সার্ভেয়ার হিসেবে অত্র অঞ্চলের মানুষ জনের জমি মেপে দিতেন, একই সাথে কাজীগিরি করতেন আর বাড়িতে পানি সেচের পাম্প বসিয়ে ধানি জমিতে পানি সেচ দিতেন।

যে বাড়িতে এতো গুলো মেয়ে সে বাড়ির নিরাপত্তার বিষয় সর্ব প্রথম তাকে ভাবতে হয়েছে আর এজন্য বাড়ি ঘর সেভাবেই তৈরী করতে হয়েছিলো। এছাড়াও সে সময়ে গ্রামীণ পরিবেশ ছিলো মূর্খতায় ভরা, এতো কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় অনেক ভুয়া ফতুয়াবাজ এবং কুসংস্কারাছন্ন মূর্খদের অনেক কটু কথা সহ্য করতে হয়েছে মাস্টার দম্পতিকে। এছাড়াও গ্রাম্য অশিক্ষিত ক্ষমতা ধর ছেলে এবং তাদের পরিবারের লোলুপ দৃষ্টি থেকে মেয়েদেরকে রক্ষা করতেও অনেক বেগ পেতে হয়েছে তাকে। কন্যারা স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া লেখা করতেন আর মাস্টার মশাই এভাবে রোবটিয় কায়দায় পরিশ্রম করে কন্যাদের অর্থের যোগান দিতেন। মাস্টার মশাই নিজ বংশ এবং আত্নীয়-স্বজন সহ এলাকার ভাইদের মধ্যে তিনি ছিলেন বয়সে সবার বড়, তাই বড় ভাই নামেই সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন। শত ব্যস্ততার মাঝেও সামাজিক ও জনসেবা মুলক কর্মকান্ডে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে। এলাকার প্রায় সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার সার্বিক তত্ত্বাবধানে। এছাড়াও সুদীর্ঘকাল পর্যন্ত ঐ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের বিপদের সঙ্গী এবং সু-পরামর্শক হিসেবে তিনি ছিলেন একমাত্র ভরসা। যন্ত্রের ব্যবহার যত বেশি ক্ষয় ততো দ্রুত হয়। মাস্টার মশাই অক্লান্ত পরিশ্রম করে অবশেষে ব্রেনের দিক থেকে অক্ষম হয়ে পড়লেন;

ততোদিনে মেয়েরা পূর্ণ প্রস্ফুটিত আর সু-প্রতিষ্ঠিত হয়ে বড় চেয়ারে বসে সৌরভ ছড়াতে শুরু করেছেন। ২০০৯ সালে ১৭ এপ্রিল একদিন সবার বড় ভাই সাত্তার মাস্টার সাহেব চলে গেলেন না ফেরার দেশে। রেখে গেলেন তার ঔরশ জাত সু-প্রতিষ্ঠিত আলোরদূতি ছড়ানো ৯ টি তারকা কন্যা এবং আজীবন সংগ্রামী প্রিয়তমা স্ত্রী হাজেরা বেগম কে। যিনি স্বামীর মতোই বটবৃক্ষের মতোই মেয়ে-জামাই অসংখ্য নাতি-নাতনি, আত্নীয়, পাড়াপ্রতিবেশি আর গ্রামের মানুষের বিপদে আপদে সবার আশা ভরসার জায়গা।

৯ কন্যা কোথায় কি অবস্হায় এক নজরে তাদের নাম জেনে নেই। কন্যা নম্বর এক- ডঃ সাইদা, পেশায় শিক্ষকতা, দেখতে অসাধারণ সুন্দর বুদ্ধিমতি ও বিচক্ষণ, তার সমসাময়িক কেউ তার সমকক্ষ হতে পারেনি বস্তুত যে সময়ে সে উচ্চ শিক্ষা নিয়েছে সে সময়ে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় সম্বন্ধে অধিকাংশ পরিবারের মানুষদের কোনো ধারণাই ছিলোনা। প্রথম বিয়ে হয় একজন সরকারি কলেজের প্রফেসরের সাথে কিন্তু কয়েক বছর পরেই প্রফেসর সাহেবের আকষ্মিক মৃত্যু হলে প্রচন্ড রকম হোচট খায় মাস্টার পরিবার। শোকে না ভেঙ্গে শক্তিতে পরিণত করে নিজেকে আবার তৈরী করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপিকা হিসেবে যোগ দেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ মুনশি মন্জুরুল ইসলাম কে বিয়ে করেন।

কন্যা নম্বর দুই- সিদ্দিকা আকতার, উচ্চ শিক্ষিতা আদর্শ গৃহিণী, অসম্ভব বিনয়ী ও ভদ্র। । বিয়ে করেছেন মোঃ আহসান হাবিব একজন হাই স্কুল মাস্টার কে।

কন্যা নম্বর তিন- মিনু, অসাধারণ সাহসী ও তেজি দেখতে সুন্দর পেশায় প্রধান শিক্ষিকা গড়মাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বর আসলাম হোসেন সাগর, শিক্ষিত সুদর্শন ব্যবসায়ী।

কন্যা নম্বর চার- শাহীনা আকতার রিনা, অমায়িক ভদ্র এবং লাজুক স্বভাবের সুন্দর মিষ্টি মেয়ে পেশায় প্রধান শিক্ষিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়, বর এম.এ. মাজেদ অসাধারণ ভদ্র, কলেজ শিক্ষক।

কন্যা নম্বর পাঁচ- শামীমা আকতার বিন্দু, সমসাময়িক মেয়েদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর মেধাবি অথচ সহজ সরল সর্বদা হাস্যময়ী সুন্দর মনের মেয়ে, পেশায় কলেজ শিক্ষিকা, বর শামসুর রহমান শাহিন, প্রধান শিক্ষক গোপাল পুর উচ্চ বিদ্যালয়।

কন্যা নম্বর ছয়- ছাবিহা আক্তার মুন্নি, অসাধারণ সুন্দর মনের অধিকারীনি, গায়ের রঙ কালো হলেও সেই কালো থেকে যে আলোর বিচ্ছুরণ হয় তাকে না দেখলে বোঝা যাবে না। কর্মজীবনে প্রধান শিক্ষিকা নারায়ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, বর মিজানুর রহমান তুহিন, কলেজ শিক্ষক রাজাপুর।

কন্যা নম্বর সাত- ডঃ সুমনা আকতার সুমি, উচ্চতায় একটু বেটে হলেও মুখ মন্ডল গোলাকার গড়নের সুন্দর মন আর ধৌর্যশীল মেধাবী অনন্য অসাধারণ মেয়ে, শিক্ষিকা বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বর মোঃ নাজমুল হক, শিক্ষক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ।

কন্যা নম্বর আট- সামিরা আক্তার সুইট, অসম্ভব মেধাবী ও ব্যক্তিত্ব সম্পূর্ণা মেজর বাংলাদেশ সেনাবাহিনি, বর, এ.বি.এম.আসাফুদৌলা শাহীন, উচ্চ পদস্হ সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা।

কন্যা নম্বর নয়- স্নিগ্ধা আক্তার ছন্দা দেখতে সুন্দর মেধাবী গুণবতী শান্ত ভদ্র পেশায় ডাক্তার, কর্মজীবনে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ স্কিন ডিপার্টমেন্টে কর্মরত। বর এস,এম, শহিদুল ইসলাম সোহেল এ্যাড. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট; উল্লেখ্য ঐ আসনেরই সাবেক এম.পি আবুল কাশেম সরকারের কনিষ্ঠ পুত্র।

মাস্টার দম্পতির কন্যারা সমস্ত বাধাকে অতিক্রম করে নিজেদের কে রাষ্ট্রের সু-আসনে প্রতিষ্ঠিত করে বাবা মায়ের মুখ উজ্জ্বল করে প্রতিষ্ঠার রোল মডেল হিসেবে নিজেদের কে মেলে ধরে বিয়ের মাধ্যমে ৯ জন যোগ্য ছেলেকে মা বাবা কে উপহার দিয়েছে। এখানে উল্লেখ্য থাকে যে, নয় কন্যার কেউই পড়ালেখায় জীবনের প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে শেষ শ্রেণি পর্যন্ত রোল নম্বর দ্বিতীয় হয় নাই। মাস্টার দম্পতি এতগুলো কন্যার জন্ম দিয়ে হয়তো অসচেতনতার পরিচয় দিয়েছিলেন কিন্তু জন্ম দেয়া কন্যা গুলোকে যোগ্য মানুষ করে গড়ে তুলেছেন নিজেদের পরিশ্রম দ্বারা। এটাও কম কৃতিত্বর না।

সুতরাং এই ৯ রত্নার জন্ম দাতা পিতা পরলোক গমনকারী সাত্তার মাস্টার মশাইয়ের আত্নার শান্তি কামনা করছি এবং সেই সাথে জন্ম ধাত্রী সেই রত্না গর্ভা মা হাজেরা বেগম যিনি মাস্টার মশাইয়ের পাশে থেকে সংসার কে আগলে রেখে ৯ কন্যার প্রতিষ্ঠায় সহ যোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছে তার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। শুভ কামনা অবিরাম অহর্নিশ।

খবরটি শেয়ার করুন....



Leave a Reply

Your email address will not be published.



বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন

করোনা ইনফো (কোভিড-১৯)

 

 

 

 

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:০২ পূর্বাহ্ণ
  • ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ
  • ১৫:৩৬ অপরাহ্ণ
  • ১৭:১৫ অপরাহ্ণ
  • ১৮:৩১ অপরাহ্ণ
  • ৬:১৬ পূর্বাহ্ণ

জনপ্রিয় পুরাতন হিন্দি গান

জনপ্রিয় বাউল গান

[print_masonry_gallery_plus_lightbox]




জনপ্রিয় পুরাতন বাংলা গান

সর্বশেষ সংবাদ জানতে



আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”।  অনলাইন নিউজ পোর্টালটি  বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
Shares
x