মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্কঃ সারা দেশের ন্যায় চট্টগ্রাম অঞ্চলেও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গা পুজার প্রতিমা বিসর্জন নানা উৎসাহ ও উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের আয়োজন একটু ভিন্ন ধরণের হয়েছে। করোনা মহামারীর জন্য আয়োজন ও জনসমাগমের চিত্র আলাদা দেখা যাচ্ছে। করোনার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার: প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে শহরের ন্যায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আইন শৃংখলা বাহিনীর নির্দেশনা অনুযায়ী ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। তবু উলুধ্বনি, শঙ্খ ও ঢোল বাজিয়ে পানিতে ভাসানো হয় প্রতিমা। বিসর্জনের সময় আনন্দের পাশাপাশি ভক্তদের মধ্যে বিষাদেরও ছাপ ছিল। ছিল বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উৎসাহ ও উৎসবমূখর পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে।
আজ সোমবার (২৬ অক্টোবর) ছিল বিজয়া দশমী। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের উন্মুক্ত মঞ্চে প্যান্ডেল তৈরি হলোও এবার বিজয়া সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি।
সৈকতের বালিয়াড়িতে হয়নি বিদায় অঞ্জলি প্রদান অনুষ্ঠান। তবু বেলা ৩ টা থেকে কক্সবাজার জেলা বিভিন্ন উপজেলা থেকে শুরু করে পাশ্ববর্তী বান্দরবনের নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে একে একে প্রতিমা বোঝাই ট্রাক আসতে থাকে। আর ওই সব প্রতিমা ধর্মীয় রীতি মেনে সৈকতে দেয়া হয় বিসর্জন।
কক্সবাজার জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট রনজিত কুমার দাস জানান, শতাধিক মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিজয়া সম্মেলন না হলেও বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্য বছর সৈকত প্রতিমার বিদায় অঞ্জলি প্রদান করা হলেও এবার ট্রাকের তোলার আগে মন্ডপে ওই অঞ্জলি শেষ করা হয়। ফলে ট্রাক থেকে সোজা সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা জানান, মহাষষ্ঠীতে দোলায় চড়ে এসেছিলেন দুর্গা। আর গজে (হাতি) চড়ে কৈলাশে ফিরছেন দুর্গা। কক্সবাজার জেলায় এবারে প্রতিমা পূজা হয়েছে ১৪৪ টি মন্ডপে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভার সিদ্ধান্তের আলোকে ৭ দফা নির্দেশনা এবং বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের পুজোকালীন সময়ে করণীয় সম্পর্কে দিক নির্দেশনামূলক ২৬ দফা মেনে এবারের দুর্গোৎসব শেষ হয়েছে।
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনে ঢল নেমেছে সনাতন ধর্মালম্বীদের। আজ সোমবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরের পর থেকে সমুদ্র সৈকতে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন। ঢাক-ঢোল বাজিয়ে ভক্তরা মণ্ডপ থেকে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য ট্রাকবাহী প্রতিমা নিয়ে জড়ো হচ্ছে পতেঙ্গা সৈকতে। দেবী দুর্গাকে বিদায় জানাতে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে ভিড় করেছেন ভক্তরা। হাতি চেপে কৈলাসে ফিরে যাচ্ছেন মা। হিন্দু পঞ্জিকা বলছে, মা গজে গমন করলে পৃথিবীতে জলের সমতা বজায় থাকে এবং শস্য ফলন ভালো হয়৷ সুখ সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ থাকে মর্ত্যভূমি৷
আজ দশমীতে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হচ্ছে বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গাপূজা। চট্টগ্রাম নগরের ১৬টি থানায় ২৭৩টি মণ্ডপে এবার দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়। করোনা ভাইরাসের কারণে এবার শোভাযাত্রা, ধর্মসভা এবং প্রতিমা নিরঞ্জন করা হচ্ছে না। প্রতিমা বিসর্জনে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সিএমপির পক্ষ থেকে পযার্প্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান সিএমপি পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এলাকায়ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের প্রতিমা বিসর্জন দিয়েছেন।
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply