মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩১ অপরাহ্ন
সিলেট থেকে জয়নাল আযাদঃ— সিলেটের কানাইঘাট থানা পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় গত ১ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে কানাইঘাট পৌর শহরের ছইফা ভিলায় অবস্থিত ‘ইউনিলিভার ড্রিস্ট্রিভিউশন’ অফিসের দুঃসাহসিক চুরির ঘটনার সাথে জড়িত ৩ পেশাদার অপরাধীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।
এ ঘটনায় ১ সেপ্টেম্বর ইরাম ট্রেডিং এর সত্ত্বাধীকারী এনামুল হক কানাইঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে পুলিশ চোর চক্রকে গ্রেফতার করতে মরিয়া হয়ে উঠে।
কানাইঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল করিম ও থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম সোমবার বিকেল ২টায় কানাইঘাট প্রেসক্লাবে কর্মরত সাংবাদিকদের নিয়ে থানায় এক প্রেস ব্রিফিং এ বলেন, সিলেটের বিভিন্ন থানা এলাকায় বিভিন্ন দোকান, শো-রুম ও অফিসে দুস্কৃতিকারী চক্ররা রাতের বেলা অফিস ও বাসা বাড়ীর গ্রীল কেটে অভিনব পন্থায় ভিতরে ঢুকে মূল্যবান সামগ্রী সহ টাকা পয়সা চুরি করে থাকে। এই অপরাধী চক্রকে গ্রেফতার করতে সিলেটের বিজ্ঞ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম জেলা পুলিশের প্রতিটি থানা পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
গত ১ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে কানাইঘাটের সইফা ভিলার ‘ইরাম ট্রেডিং ইউনিলিভার ড্রিস্ট্রিভিউশন’ হাউজ অফিসের জানালার গ্রীল কেটে অফিসে প্রবেশ করে মুখোশধারী একটি অপরাধী চক্র নগদ প্রায় ৯ লক্ষ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। দুঃসাহসিক চুরির এ ঘটনাটি সিসি ক্যামেরায় ফুটেজে ধরা পড়ে। পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন চুরির ঘটনাটি উদ্ঘাটন এবং প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করতে থানা পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করেন।
থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম ও ওসি (তদন্ত) আনোয়ার জাহিদের নেতৃত্বে বিশেষ টিম গঠন করে পুলিশ চুরির সাথে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার করতে এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে প্রযুক্তির সহায়তায় অপরাধীদের চিহ্নিত করে অভিযানে নামেন।
পুলিশ গত ১২ সেপ্টেম্বর সিলেট শহরস্থ টুকের বাজার এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে নারায়নগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার নতুন বাজার গ্রামের শাহআলম মৃধার পুত্র কুখ্যাত অপরাধী মামুন @ মিজার (৩২)কে গ্রেফতার করে। পুলিশ তার স্বীকারোক্তি মূলক সূত্র ধরে তার অপর সহযোগীদের ধরতে ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
একপর্যায়ে সহযোগী আসামী ভোলা জেলার চরফেশন থানার নুরাবাদ গ্রামের মুত রফিজুল ইসলামের পুত্র ফারুক হোসেন (৩৫) এর অবস্থান জেনে দারুস সালাম থানা পুলিশের সহায়তায় সকাল ৯টায় দিয়াবাড়ী এলাকা থেকে ফারুক হোসেনকে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্য মতে অপর সহযোগী সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানার দুলদিয়া @ দুলের চর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের পুত্র এনামুল হক (১৮) কে ১৪ সেপ্টেম্বর বেলকুচি থানা পুলিশের সহযোগিতায় কানাইঘাট থানা পুলিশ গ্রেফতার করে।
পরে চুরির ঘটনায় ব্যবহৃত প্রাইভেট কারটি সিলেট শহরস্থ সানমুন হোটেলের পাশ থেকে রবিবার উদ্ধার করে পুলিশ। আসামীদের স্বীকারোক্তি মতে জালালাবাদ থানার শেখ পাড়াস্থ মামুন @ মিজানের বসত ঘরে থেকে লুন্ঠিত ৮ লক্ষ ৯১হাজার ৫৯৬ টাকার মধ্যে ১ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরো জানায়, এই দুধর্ষ চোর চক্র প্রাইভেট কার ব্যবহার করে ভাসমান অবস্থায় বিভিন্ন এলাকায় রেকি করে বাসাবাড়ি, অফিস, শো-রুমে অভিনব পন্থায় গ্রীল কেটে ও তালা ভেঙ্গে চুরি করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এ চক্রের অন্যান্য সদস্যদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ মাঠে সক্রিয় রয়েছে।
এদিকে ইউনিলিভার ডিস্ট্রিবিউশন সহ কানাইঘাটে দুঃসাহসিক চুরির মতো অপরাধ মূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসে কানাইঘাটে এ ধরনের চুরির ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় অনেকে বিষ্মিত হয়েছেন।
এরপূর্বে থানার পাশে অবস্থিত ৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অনুরূপ চুরির ঘটনার সাথে জড়িত চক্রকে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর ও মৌলভীবাজার থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছিল কানাইঘাট থানা পুলিশ।
থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃতদের গতকাল সোমবার আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। অধিকতর তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য তাদের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply