বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৪ অপরাহ্ন
চট্টগ্রাম (লোহাগাড়া) থেকে অমিত কর্মকারঃ— লোহাগাড়ায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বীরবিক্রম পিএসসি’র দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ১৮ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪ টায় উপজেলার চুনতির ঐতিহাসিক সীরত ময়দানে তাঁর জানাায়ার নামাজ সম্পন্ন হয়। জানাযার নামাজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গার্ড অব অনার ও সালাম প্রদান করেন।
এতে পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মরহুমের বড়ভাই আলহাজ্ব মুহাম্মদ ঈসমাঈল মানিক। জানাযায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোঃ ইলিয়াস হোসেন , কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোসলেম উদ্দিন, চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সাংসদ প্রফেসর ড.আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী, লোহাগাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুল, সাতকানিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ মোতালেব, লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তৌছিফ আহমেদ, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোবারক হোসেন, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিবলী নোমান, সাতকানিয়া সার্কেল হাসানুজ্জামান মোল্ল্যা, লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ জাকের হোসেন মাহমুদ, লোহাগাড়া আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক মোঃ জহির উদ্দিনসহ দশহাজারের অধিক মুসল্লী অংশগ্রহণ করেন। জানাযা শেষে মায়ের কবরের পাশেই পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। লোহাগাডার সার্বিক উন্নয়নে দীর্ঘদিন থেকে ভুমিকা রাখা এ সেনা কর্মকর্তার মৃত্যুতে শোকের ছাঁয়া বিরাজ করেছে পুরো লোহাগাডা জুড়ে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ১৩মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। গত ১৮ ডিসেম্বর বুধবার তাঁর মরদেহ দেশে আনা হয়। ১৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় ঢাকা সেনানিবাসে নামাজে জানাজা শেষে হেলিকপ্টারে করে লাশ লোহাগাড়ায় আনা হয়।
জানা যায়, ১৯৬০ সালের ১লা জানুয়ারি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি মুন্সেফ বাজারের পশ্চিম পাশে সিকদার পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন জয়নুল আবেদীন। পিতা মরহুম ইছহাক মিয়া ও মাতা মরহুমা মেহেরুন্নিছা। ছাত্র জীবনে চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদরাসায় পড়ালেখার হাতেখড়ি। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৭৫ সালে এসএসসি ও ১৯৭৭ সালে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। দুই বছর বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমীতে প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত হন। পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৯৯৫-৯৬ সালে দায়িত্ব পালনকালে তার সাহসী নেতৃত্ব, বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতার কারণে অনেক জটিল সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব হয়। দেশের প্রতি নির্ভয় আত্নত্যাগ, পাহাড়সম মানসিক দৃঢ়তা ও দেশ সেবার মহান ব্রত বিবেচনায় তাকে মর্যাদাপূর্ণ ‘বীর বিক্রম’ উপাধিতে ভুষিত করা হয়।
একজন চৌকস সেনা অফিসার হিসেবে তিনি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে অংশগ্রহণ করেন। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের ভাবমুর্তি উজ্জ্বল ও কর্মদক্ষতার কারণে শান্তিরক্ষা মিশন থেকে ফিরে আসার পর তাকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে তাকে এসএসএফ এর মহাপরিচালক পদে অধিষ্ঠিত করা হয়। ওই বছরের এপ্রিল মাসে মেজর জেনারেল পদে তিনি পদোন্নতি লাভ করেন। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব হিসেবে তিনি দায়িত্বরত ছিলেন।
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply