মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৪ অপরাহ্ন
আজকের দিগন্ত অনলাইন ডেস্ক :— হীরক বা হীরা বা হীরে হল সর্বাপেক্ষা মূল্যবান একটি রত্ন যা গহনা তৈরিতে বহুল ব্যবহৃত হয়। হীরা বলতে চোখের সামনে যে সাদা ধবধবে উজ্জ্বল বস্তু ভেসে ওঠে শুধু তাকেই বোঝায় না। এছাড়াও অন্য রঙের হীরাও আছে। একটি হীরা পাথর তৈরি হতে সময় লাগে কয়েক বিলিয়ন বছর । সাদা হীরার পাশাপাশি কালো, সবুজ, নীল বাদামী, হলুদ, লাল, গোলাপি, বেগুনী সহ আরো কিছু রঙের হীরা পাওয়া যায় ।
বর্ণহীন এ হীরক বা হীরা রত্নটি একটি মাত্র বিশুদ্ধ উপাদান কার্বন থেকে সৃষ্ট। অন্য ভাষায় হীরক কার্বনের একটি বিশেষ রূপ মাত্র। পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ২৬০০০ কে.জি. খনিজ হীরা উত্তোলিত হয় যার মূল্য প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার। কথিত আছে, হীরক সর্বপ্রথম ভারতবর্ষে মূল্যবান হিসেবে খনি থেকে উত্তোলন ও ব্যবহার করা শুরু হয়। হীরা ভারতবর্ষের মানুষের কাছে কমপক্ষে ৩ থেকে ৬ হাজার বছর ধরে পরিচিত বলে অনুমান করা হয়। মানুষের জানা সকল প্রাকৃতিক পদার্থ থেকে হীরা অনেক বেশি শক্ত এবং এটি দিয়ে উচ্চতম তাপমাত্রা পর্যন্ত কাজ সম্ভব। হীরাকে আদর্শ ধরে তৈরি করা খনিজের কাঠিন্য পরিমাপ করার মোহ স্কেলের ১-১০এ অনুযায়ী হীরার কাঠিন্য ১০। ভূ-অভ্যন্তরে প্রায় ১৪০ থেকে ১৯০ কি.মি. নিচে পৃথিবীর কেন্দ্র ও পৃথিবীর আবরণের মাঝে প্রচণ্ড তাপ ও চাপের কারণে হীরা গঠিত হতে প্রায় ১ থেকে ৩.৩ বিলিয়ন বছর সময় লাগে বলে বৈজ্ঞানিকদের ধারণা। গবেষকদের মতে, সকল হীরাই পৃথিবীতে তৈরি হয়েছে এমন নয়; পৃথিবীতে এমন অনেক হীরা পাওয়া গেছে যেগুলো পৃথিবীর বাইরে তৈরী।
হীরার মূল্য নির্ধারণ করা হয় চারটি বিষয়ের উপর। যথা – রং কিরূপ, কীভাবে কাটা হয়েছে, কতটা স্বচ্ছ প্রকৃতির এবং কত ক্যারেট ওজনের। ক্যারেট স্বর্ণের ক্ষেত্রে বিশুদ্ধতার একক। মানে যে কোন স্বর্ণের ২৪ ভাগের কত ভাগ স্বর্ণ তা বোঝাতেই ক্যারেট ব্যবহৃত হয়। ২৪ ক্যারেট বলতে বোঝায় ২৪ ভাগের ২৪ ভাগই স্বর্ণ অর্থাৎ ৯৯.৯ শতাংশ খাঁটি স্বর্ণ (যা ব্যবহারের অনুপযোগী)। আর রত্নপাথরের ক্ষেত্রে ক্যারেট হচ্ছে ভরের একক। এক্ষেত্রে ১ ক্যারেট = ০.২ গ্রাম বা ২০০ মিলিগ্রাম। খনিজ হীরক এবং অলঙ্কারের জন্য প্রস্তুত কাটা হীরার মাঝে মূল্য পার্থক্য ব্যাপক।
আফ্রিকায় হীরার প্রচুর খনি আছে। এ সব হীরা থেকে প্রাপ্ত অর্থ যুদ্ধ, হানাহানি, সন্ত্রাস ইত্যাদির অর্থায়নে ব্যবহৃত হয়। এজন্যে এরূপ হীরাকে রক্ত হীরক নামে অভিহিত করা হয়। বিশেষত দক্ষিণ আফ্রিকায় হীরক তাদের অর্থনৈতিক উন্নতির প্রধান কারণ ।
হীরা সম্পর্কে আরো কিছু অজানা তথ্য :—
১.ধারণা করা হয় সর্বপ্রথম হীরা আবিষ্কার হয় ভারতবর্ষে !
২.শুধুমাত্র হীরা দিয়েই হীরাকে কাটা যায়।
৩.পৃথিবীর প্রায় ৫০ ভাগ হীরা আফ্রিকাতেই পাওয়া যায়।
৪.স্বর্ণের ক্ষেত্রে ক্যারেট বিশুদ্ধতার একক হলেও হীরার ক্ষেত্রে ক্যারেট হচ্ছে ভরের একক।
৫.হীরা কিন্তু খনি থেকে এতো সুন্দর অবস্থায় পাওয়া যায়না। একে কেটে পালিশ করে এমন সুন্দর রূপ দেয়া হয়।
৬.রঙ্গীন হীরাগুলোর মধ্যে লাল রঙের হীরা সবচেয়ে কম পাওয়া যায়। বাংলায় একে রক্ত হীরকও বলে।
৮.বাংলাদেশে কোন হীরার খনি না থাকলেও হীরা কাটার কারখানা রয়েছে। বিদেশ থেকে খনিজ হীরা আমদানী করে সেগুলোতে হীরা কাটা আর পালিশ করা হয়ে বিভিন্ন জুয়েলারীর দোকানে বিক্রি করা হয়।
শতাব্দির সবচেয়ে বড় হীরার সন্ধান মিলেছে বতসোয়ানার।
বতসোয়ানার একটি খনিতে শতাব্দির সবচেয়ে বড় হীরকখণ্ডের সন্ধান মিলেছে । এক হাজার ১১১ ক্যারেটের উঁচু মানের এই হিরাটি পাওয়া গেছে স্টকহোমভিত্তিক লুকারা ডায়মন্ড কর্পোরেশনের খনিতে।
=== সূত্র:ইউকিপিডিয়া ===
আমরা জনতার সাথে......“আজকের দিগন্ত ডট কম”
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত “আজকের দিগন্ত ডট কম”। অনলাইন নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply